এলভিস প্রেসলির উত্তরসূরি রাইলি কিয়ো: দাদার ছায়া পেরিয়ে নিজের পথের আলো খুঁজে পেলেন

 এলভিস প্রেসলির নাতনি বলে কথা! এই পরিচয়ই ছিল তাঁর জীবনের প্রথম এবং সবচেয়ে বড় পরিচ্ছদ।তবে আজ, সেই নামের ছায়া পেরিয়ে রাইলি কিয়ো নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন পূর্ণাঙ্গ অভিনেত্রী, প্রযোজক এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে।

সম্প্রতি তাঁর নতুন সিনেমা ‘জে কেলি’-এর প্রিমিয়ার উপলক্ষে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ৩৬ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী কথা বলেছেন জীবনের উত্থান–পতন, পরিবারের উত্তরাধিকার, এবং নিজের স্বপ্নপূরণের গল্প নিয়ে।


👑 দাদার ছায়ায় বেড়ে ওঠা এক মেয়ে

রাইলির জন্মের আগেই কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী এলভিস প্রেসলি এই পৃথিবী ছেড়ে গেছেন।
তবুও ছোটবেলা থেকেই দাদার প্রভাব ছিল তাঁর জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে।

রাইলি স্মৃতিচারণায় বলেন,

“আমরা যখন ছোট ছিলাম, এলভিসের শেফরা আমাদের জন্য রান্না করতেন—শাকসবজি, ভাজা ক্যাটফিশ, ফ্রায়েড চিকেন, কর্নব্রেড আর কলার পুডিং… একদম ঘরের খাবারের মতো। এটা ছিল খুব বিশেষ অভিজ্ঞতা।”

তবে এই বিলাসবহুল বেড়ে ওঠার আড়ালেও ছিল গভীর মানসিক যন্ত্রণা ও ব্যক্তিগত ক্ষতি।


💔 পরিবারে পর পর শোকের ছায়া

২০২০ সালে নিজের ছোট ভাইয়ের আত্মহত্যা রাইলির জীবনে গভীর এক দাগ ফেলে।
এরপর ২০২৩ সালে মা লিসা মেরি প্রেসলির মৃত্যুর ধাক্কায় আবারও ভেঙে পড়েন তিনি।

এর মধ্যেই দাদি প্রিসিলা প্রেসলির সঙ্গে উত্তরাধিকার ও গ্রেসল্যান্ড সম্পত্তি নিয়ে আইনি লড়াই তাঁকে সামনে নিয়ে আসে।
এই লড়াইয়ের মধ্যেই তিনি একাই এখন গ্রেসল্যান্ড ও Elvis Presley Enterprises-এর পরিবারের শেয়ারগুলোর দায়িত্বে আছেন।

১৯৭৭ সালে এলভিসের মৃত্যুর সময় এই সম্পত্তির মূল্য ছিল মাত্র ৫ মিলিয়ন ডলার। আজ সেই সম্পদের মূল্য প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার—আর সেই সাম্রাজ্যের দায়িত্ব এখন রাইলির কাঁধে।


🎬 অভিনয় থেকে প্রযোজনা—নিজেকে নতুনভাবে গড়া

রাইলি শুধু উত্তরাধিকারিণী নন; তিনি একজন স্বতন্ত্র শিল্পী।
১৪ বছর বয়সে মডেল হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করলেও দ্রুতই অভিনয়ের দিকে মন দেন।
দ্য রানওয়েজ’, ‘ম্যাজিক মাইক’, ‘লোগান লাকি’, ‘দ্য গার্লফ্রেন্ড এক্সপেরিয়েন্স’-এর মতো প্রকল্পগুলো তাঁকে অভিনয়ের জগতে পরিচিতি দেয়।

তবে আসল ব্রেক আসে ‘ডেইজি জোনস অ্যান্ড দ্য সিক্স’ সিরিজের মাধ্যমে, যা তাঁকে এনে দেয় এমি মনোনয়ন
অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি প্রযোজক হিসেবেও নিজের জায়গা তৈরি করেছেন—শিল্প ও বাস্তবতার মিশেলে গড়ে তোলা গল্পগুলোয়।

রাইলির ভাষায়,

“মায়ের মৃত্যু, ভাইয়ের চলে যাওয়া—সবকিছু মিলে একসময় আমি ভেঙে পড়েছিলাম। কিন্তু কাজই আমাকে আবার দাঁড়াতে সাহায্য করেছে। কঠিন সময় আমাকে আত্মবিশ্বাসী করেছে, আমি এখন নিজের পথ খুঁজে পেয়েছি।”


🎥 ‘জে কেলি’: নতুন চরিত্রে রাইলি

নতুন সিনেমা ‘জে কেলি’-তে রাইলি অভিনয় করেছেন জর্জ ক্লুনির বড় মেয়ের চরিত্রে
চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন নোয়া বাউমবাখ, যিনি তাঁর সূক্ষ্ম পারিবারিক গল্প বলার জন্য পরিচিত।
এই ছবির বিশ্বপ্রিমিয়ার হয়েছে ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে, আর মুক্তি পাবে ১৪ নভেম্বর প্রেক্ষাগৃহে।

রাইলির মতে,

“এই চরিত্রটা আমার নিজের জীবনের প্রতিফলন। শোক, ভালোবাসা আর আত্মপরিচয়ের টানাপোড়েন—সব কিছুই আছে এখানে।”


🌹 নিজের নামেই পরিচিত এখন রাইলি

একসময় রাইলি কিয়ো মানেই ছিল ‘এলভিস প্রেসলির নাতনি’।
আজ তিনি শুধু রাইলি কিয়ো—একজন প্রতিভাবান অভিনেত্রী, প্রযোজক, এবং বেঁচে থাকার লড়াইয়ের প্রতীক।

বিখ্যাত পরিবারের উত্তরাধিকার বহন করেও তিনি প্রমাণ করেছেন—

“পরিচয় পাওয়া যায় নিজের কাজের মাধ্যমে, উত্তরাধিকারে নয়।”


  • 🎤 এলভিস প্রেসলির নাতনি রাইলি কিয়ো এখন স্বাধীন পরিচয়ে পরিচিত

  • 💔 ভাই ও মায়ের মৃত্যুতে ভেঙে পড়লেও নিজেকে গড়ে তুলেছেন অভিনয়ের মাধ্যমে

  • 🎬 নতুন সিনেমা ‘জে কেলি’-তে জর্জ ক্লুনির মেয়ের চরিত্রে অভিনয়

  • 💼 বর্তমানে গ্রেসল্যান্ড ও এলভিস প্রেসলি এন্টারপ্রাইজের দায়িত্বে রাইলি কিয়ো

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url